ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ঝড় ও বজ্রপাতে দুই দিনে সারা দেশে ১৬ জনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ঝড় ও বজ্রপাতে দুই দিনে সারা দেশে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুর ১২টা থেকে শনিবার (৪ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ, বাগেরহাট, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরগুনা, নোয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর ও পটুয়াখালীতে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী শনিবার (৪ মে) সকাল ৬টার দিকে সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চলে প্রবেশ করলেও শুক্রবার (৩ মে) সকাল থেকেই এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। যে কারণে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বজ্রপাত ও ঝড়ে গাছ পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়। এরপর শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আরো সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (৩ মে) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসে কাঠের ঘর ধসে দাদি ও নাতির মৃত্যু হয়। উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামে বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দাদির নাম নুরজাহান (৬০) ও নাতির নাম জাহিদুর (৯)। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরদুয়ানি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহিন মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ঝড়ো বাতাসে ইউনিয়নের আরও ৪০-৪৫টি ঘর উড়ে গেছে। এ ঘটনায় কতজন আহত হয়েছেন, তা এখনো জানা যায়নি।
নোয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো বাতাসের আঘাতে বিধ্বস্ত ঘরের নিচে চাপা পড়ে মো. ইসমাইল নামে ১৩ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমিনুল হক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারীসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ঝড়ে হতাহতের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মো. হামিদুল হক। এছাড়া, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নে আম কুড়াতে গিয়ে ঝুমুর (১২) নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিশু মারা গেছে। শনিবার (৪ মে) সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। ঝুমুর ওই এলাকার আবদুল হামিদের মেয়ে। জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (৪ মে) সকালে ভোলা থেকে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় ফণির আঘাতে ঘরচাপা পড়ে রানী বেগম (৫০) নামে এক নারী নিহত হন। শনিবার ভোরে সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রানী বেগম ওই এলাকার সামসুল হকের স্ত্রী ও দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁধের বাসিন্দা। ভোলা সদরের ইউএনও মো. কামাল হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া ও কোড়ালিয়া গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘড়বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।